অস্ত্র এবং মাদক ব্যবসা নিয়ে আধিপত্য, ক্যাম্পের দখলদারিত্ব নানামুখী জটিলতায় অস্থির রোহিঙ্গা শিবিরগুলো
অস্ত্র এবং মাদক ব্যবসা নিয়ে আধিপত্য, ক্যাম্পের দখলদারিত্ব বজায় রাখাসহ নানামুখী জটিলতায় অস্থির হয়ে উঠেছে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরগুলো। রোহিঙ্গাভিত্তিক বিবদমান গ্রুপগুলোর মধ্যে প্রতিদিনই ঘটছে সংঘর্ষ, প্রাণহানির মতো ঘটনা। আজও দু'গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত হয়েছে দু'জন। রোহিঙ্গাদের এ অভ্যন্তরীণ বিরোধে উদ্বিগ্ন এবং আতঙ্কিত স্থানীয়রা। এ অবস্থায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর নিরাপত্তা ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছে পুলিশ।
কক্সবাজার প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩ বছরের বেশি সময় ধরে টেকনাফ এবং উখিয়ার আশ্রয় শিবিরগুলোতে থাকা রোহিঙ্গারা খুন, ধর্ষণ, মাদক ও মানব পাচার এবং অস্ত্র ব্যবসার মতো অন্তত ১৫ রকমের অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। বিশেষ করে মাদক ও অস্ত্র ব্যবসা নিয়ে অভ্যন্তরীন বিরোধ চরম আকার ধারণ করেছে। প্রতি রাতেই ক্যাম্পগুলোতে শোনা যায় গুলির শব্দ।
জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন বলেন, অপরাধপ্রবণতা আছে, সেগুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও আছে। আমাদের বের হওয়ার পথগুলো আইনশৃংখলাবাহিনীর হাতে রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বাংলাদেশে ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদক বিস্তারে বড় ধরণের ভূমিকা রাখছে ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গারা। আর পুলিশের তথ্য মতে, এর মধ্যে বিভিন্ন অভিযোগে দু’হাজারের বেশি রোহিঙ্গার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে প্রায় সাড়ে সাতশ। দায়েরকৃত মামলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে মাদক মামলা। যার সংখ্যা প্রায় সাড়ে চারশ। এর বাইরে রয়েছে ৬০টির বেশি খুনের মামলা এবং অন্তত ৬৫টি অস্ত্র মামলা।
কক্সবাজার বাঁচাও আন্দোলন সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আয়াছুর রহমান বলেন, আমাদের অবস্থাটা যদি সীমান্তে না ঠিক করি, তাহলে মাদক কোন অবস্থাতেই বন্ধ হবে না।
পুলিশসহ পুরো কক্সবাজার প্রশাসনের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে অস্থিরতার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ বিরোধের জের ধরে একের পর এক খুনের ঘটনা।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, আমরা এখানে এসেছি নতুন কিন্তু ট্রেনিং কিন্তু নতুন না।
ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, সমস্ত ব্যাকগ্রাউন্ড আমরা উপস্থাপন করবো। এভাবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভিতরে আইন জোরদার করা হবে।
গত দু'দিনে খুন হয়েছে ৩ জন। এ অবস্থায় ক্যাম্পগুলোর নিয়ন্ত্রনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।
মিয়ানমার বাহিনীর নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে বিগত ২০১৭ সালের ২৫ আগষ্ট থেকে ব্যাপক হারে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ শুরু করে। এই সময়ে অন্তত আট লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে সরকারি ও আন্তর্জাতিকভাবে তথ্য রয়েছে। এছাড়া আগে থেকে আরো প্রায় ৩ লাখ রোহিঙ্গার অবস্থান ছিলো বাংলাদেশে।